#ছোট_গল্প
#আইছেনি?
রফিক উদ্দিন লস্কর।
০৩/০৮/২০১৮ইং
=====================
. বর্ষার সকাল। ঘুম থেকে উঠে হাত মুখ ধুয়ে সকালের নাস্তাটা সবেমাত্র শেষ। ক'দিন আগে বন্যা শেষ হলো কিন্তু আজকের এই ধারা বর্ষন দেখে মনের মাঝে ভয়ের সঞ্চার হলো মনে হয় এবারও সব ধূয়ে মুছে নেবে। এমন সময় কলিং বেলে বেশ ক'বার রিং বাজলো; দরজা খুলামাত্র দেখি মুখভরা হাসি নিয়ে ধারা বর্ষণকে ডিঙিয়ে হাজির রমেশ। আগেভাগে কোনকিছু বলেনি অথচ নিতে এসেছে সঙ্গে করে, ও জানে ওর কথায় আমার কোন আবদার থাকে না। তাই একটু আগবাড়িয়ে বললো আজকে আমাদের গুয়াহাটি যাওয়ার কথা। একটা জরুরী মিটিং আছে। আটটার ট্রেন ধরতে হবে, না হলে সারাদিন স্টেশনের প্লাটফর্মে বসে বসে দিন কাটাতে হবে। তাই ওর কথা মাথায় রেখে তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হয়ে গেলাম। একটা অটোতে চেপে দু'জন ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। ট্রেনের টিকিট কেটে যথা সময়ে ট্রেনের কামরায় ঢুকে পড়লাম। ট্রেন সাইরেন বাজালো, তার আপন গতিতে সবুজের দৃশ্য দেখিয়ে দেখিয়ে চলতে লাগল।
ছোটখাটো স্টেশনে এক মিনিট থামায়। পেটে তেমন খিদে নেই, কারণ দু'দিন আগে এক মহা বিষয়ের রায়দান হয়েছ। ভাগ্যিস! কোনমতে আমি ছাড় পেয়েছি। রমেশের ও কোন অসুবিধে নেই। বিন্দাস!..। ট্রেনে পা ফেলানোর জায়গা নেই, মানুষ আর মানুষ। ভারী বৃষ্টি, বাইরের দৃশ্য দেখে মনে হয় এইমাত্র সন্ধ্যা নেমে এসেছে । যাইহোক কিছুদূর যাওয়ার পর সূর্যের আলো চারিদিক আলোকিত করে তুলল। মনের শঙ্কা কিছুটা দূর হলো। ট্রেনে পাশে বসা এক ভদ্রলোক আমার কানে কানে বললেন "আইছেনি?"... আমি বললাম হ্যাঁ। আপনার? ভয়াতুর কণ্ঠে বললেন সবার নেই। রমেশের ও একি অবস্থা, তবে ওর মনে ভয়ের লেশমাত্রও নেই। তারপর নানা গল্প করতে করতে আমাদের যাত্রা চলতে লাগল। কিছুদূর যাওয়ার পর সামনে দেখা গেল রেল লাইনে লাল নিশান টাঙানো আর জমায়েত কিছু যুবক। ট্রেনের পাইলট ও ট্রেন বন্ধ করে দিল। যুবকরা ট্রেনে ঢুকে একে একে সবার পরিচয় পত্র যাচাই করতে লাগলো। ট্রেনের মধ্যে একটা হাহাকার লেগে গেল, শেষ পর্যন্ত অনেক যাত্রীকে ওরা নামিয়েও দিলো। যাত্রীদের কোন সুপারিশ কাজে লাগলো না .. আমি আর রমেশ শুধু হা করে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম।..........
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন